জৈব যৌগের নামকরণ
জৈব যৌগের নামকরণ করা হয় তিনটি পদ্ধতিতে
১। সাধারণ বা ট্রিভিয়াল পদ্ধতি
২। উদ্ভুদ বা জাত পদ্ধতি
৩। আর্ন্তজাতিক বা জেনেভা বা IUPAC
পদ্ধতি
সাধারণ এবং
উদ্ভুদ পদ্ধতিতে নামকরণ খুবই দুরুহ ব্যাপার। এজন্য
১৮৯২ সালে জেনেভা পদ্ধতি চালু হয়। এই
পদ্ধতিতে সকল জৈব যৌগের নামরকন করা যায়।
সাধারণ বা
ট্রিভিয়াল পদ্ধতিতে
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের
নামকরণ ঃ
এই পদ্ধতিতে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বনের নামের শেষে ‘‘এন’’ যোগ করা
হয়।
এদের ১ম
চার সদস্যের নাম সম সংখ্যক কার্বন পরমানু বিশিষ্ট অ্যালকোহলের নাম থেকে নেওয়া
সংখ্যা সূচক গ্রীক শব্দের শেষে ‘‘
এন ’’
যুক্ত করে নামকরণ করা হয়।
চার
বা ততধিক কার্বন পরমানু বিশিষ্ট সরল গঠনের ক্ষেত্রে নামের আগে n- বসাতে
হয় । যেমন- CH3-CH2-CH2-CH3
(n- বিউটেন)
যদি যৌগের
কার্বন শিকলের প্রান্তে তিনটি কার্বন m¤^wjZ (CH3)2-CH- মুলক
বিদ্যমান থাকে ,
তবে উক্ত যৌগের নামের পূর্বে iso-hy³
করতে হয়। যেমন
-
![]() |
(CH3)2-CH-CH2-CH3 iso-‡c‡›Ub
যদি যৌগটির কার্বন শিকলে কোয়ার্টানারী কার্বন (৪০) বিদ্যমান থাকে তবে উক্ত যৌগের নামের পূর্বে neo- বসাতে
হয়
neo-‡c‡›Ub
উদ্ভুদ বা
জাত পদ্ধতি
ঃ
এই পদ্ধতিতে নামকরণকালে সাধারণ যৌগ ব্যাতিত সব হাইড্রোকার্বনকে মিথেন জাত যৌগ বলে ধরা হয় এবং সবচেয়ে বেশি শাখাযুক্ত কার্বনকে মিথেন কার্বন বলা হয়।
যেমন ু
# অ্যালকাইল মুলক ঃ অ্যালকেন থেকে একটি হাইড্রোজেন পরমানু অপসারন করলে যে একযোজী মুলক পাওয়া যায় তাকে অ্যালকাইল মুলক বলে। একে
R দ্বারা
প্রকাশ করা হয়। এর
সাধারণ সংকেত CnH2n+1

নামকরণের
ক্ষেত্রে ‘‘এন’’ এর স্থলে ‘‘আইল’’
যোগ করা হয়।
যেমন -
মিথাইল মুলক

আর্ন্তজাতিক পদ্ধতি
ঃ
(অ্যালকেনের নামকরণ)
রুল-১ ঃ সরল শীকল
যৌগের ক্ষেত্রে ১ম চার সদস্য মিথেন, ইথেন, প্রোপেন, বিউটেন এর ক্ষেত্রে সাধারণ পদ্ধতির নামই বহাল থাকে। পাঁচ
কার্বন হতে উচ্চতর হাইড্রোকার্বন যৌগগুলোর ক্ষেত্রে দীর্ঘ শিকলের কার্বন পরমানুর সংখ্যা গ্রীক সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করে ঐ সংখ্যার শেষে ‘‘এন’’ যোগ করে
নামকরণ করা হয়। যেমন
গ্রীক
শব্দ
কার্বন সংখ্যা
৫ হলে =>
পেন্ট + এন =
পেন্টেন (C5H12)
কার্বন সংখ্যা
৬ হলে =>
হেক্স +
এন =
†n‡·b(C6H14)
কার্বন সংখ্যা
৭ হলে =>
হেপ্ট +এন= †n‡Þb(C7H16)
কার্বন সংখ্যা
৮ হলে =>
অক্ট +এন= A‡±b(C8H18)
কার্বন সংখ্যা
৯ হলে =>
নন + এন = b‡bb(C9H20)
কার্বন সংখ্যা
১০ হলে =>
ডেক + এন = †W‡Kb(C10H22)

|
||||
![]() |
||||

রুল-৩ঃ দীর্ঘতম কার্বন শিকলের যে পার্শ্ব থেকে আগে শাখা পাওয়া যাবে সেই পার্শ্ব থেকে ১, ২, ৩--- সংখ্যায়িত করতে হবে।


রুল -৪ ঃ প্রথমে যে কার্বনে শাখা পাওয়া যাবে তার সংখ্যা লিখে (সংখ্যা
ও অক্ষরের মাঝে ‘‘-’’
দিতে হবে) শাখায় প্রাপ্ত মুলক বা পরমানুর নাম লিখতে হবে তারপর মুল শিকলের নাম লিখতে হবে।



৩-মিথাইল হেক্সেন
রুল-৫ঃ যদি বিভিন্ন কার্বনে একই প্রকার একাধিক শিকল থাকে তবে মুলকের নামের আগে ডাই, ট্রাই-- ইত্যদি
শব্দ যোগ করতে হবে।



![]() |
|
রুল ৭ ঃ যদি দুই বা ততোধিক অনুরুপ মুলক যৌগটিতে বিদ্যমান থাকে, তবে এদের
অবস্থান সমূহ যথোপযুক্ত সংখ্যা দ্বারা সুচিত করা হয়। (মুলকের অবস্থানগত সংখ্যার যোগফল যে পার্শ্ব থেকে কম হবে সেই পার্শ্ব থেকে গণনা করতে হবে)
![]() |
এর নাম ৩-ইথাইল-২,৫-ডাই মিথাইল হেক্সেন কিন্তু ৪-ইথাইল-২,৫-ডাই মিথাইল হেক্সেন নয়। কারন - এখানে ১ম ক্ষেত্রে স্থান নির্দেশক সংখ্যাগুলোর যোগফল- ৩+২+৫=১০ কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে যোগফল ৪+২+৫=১১।
![]() |
রুল ৮ ঃ শাখাযুক্ত অ্যালকেন সমুহের দীর্ঘতম কার্বন শিকলের সঙ্গে যুক্ত পার্শ্ব শিকলে চারের অধিক কার্বন পরমানুর জটিল প্রতিস্থাপক থাকলে , এটাকে পৃথকভাবে সংখ্যায়িত করে বন্ধনির মধ্যে এর নাম পূর্বোক্ত নিয়মে লিখে মূল যৌগের নামের পূর্বে লেখা হয়।
৫-(১,২-ডাই মিথাইল
প্রোপাইল) ননেন
অ্যালকিনের নামকরণ ঃ
সাধারণ সংকেত
=> CnH2n
নামের শেষে
থাকবে =>
ইন
কার্যকরী মূলক
=> C=C (Kve©b-Kve©b দ্বিবন্ধন)

রুল-১ঃ
দ্বি-বন্ধনী
যুক্ত দীর্ঘতম কার্বন শিকলকে মাতৃ অ্যালকেন ধরা হয়।
রুল-২ঃ যে পার্শ্ব থেকে দ্বি-বন্ধনী আগে পাওয়া যাবে সেই পার্শ্ব থেকে মাতৃ অ্যালকেনকে গণনা করতে হবে।

রুল -৩ঃ শাখায়িত অ্যালকিনের ক্ষেত্রে দীর্ঘতম কার্বন শিকলের মধ্যে অবশ্যই দ্বি-বন্ধন যুক্ত কার্বন পরমানুদ্বয়কে রাখতে হবে।


বা
২-ইথাইল-৩-মিথাইল
পেন্টিন-১
বা ২-ইথাইল-৩-মিথাইল
-১-পেন্টিন
রুল -৫ঃ যদি মাতৃ অ্যালকিনে একাধিক দ্বি-বন্ধন থাকে তবে তাদেরকে অ্যালকাডাইন, অ্যালকাট্রাইন ইত্যাদি নামে অভিহিত করতে হবে।

অ্যালকাইনের নামকরণ
ঃ
সাধারণ সংকেত
=> CnH2n-2
নামের শেষে
থাকবে =>
আইন
কার্যকরী মূলক
=> C
C (Kve©b-Kve©b
ত্রিবন্ধন)


রুল-১ঃ ত্রি-বন্ধনী যুক্ত দীর্ঘতম কার্বন শিকলকে মাতৃ অ্যালকেন ধরা হয়।
রুল-২ঃ যে পার্শ্ব থেকে ত্রি-বন্ধনী আগে পাওয়া যাবে সেই পার্শ্ব থেকে মাতৃ অ্যালকেনকে গণনা করতে হবে।

রুল -২ঃ যদি মাতৃ অ্যলকাইনে একাধিক ত্রি-বন্ধন
থাকে তবে তাদেরকে অ্যালকা-ডাই-আইন, অ্যালকা-ট্রাই-আইন
ইত্যাদি নামে অভিহিত করতে হবে।

# দ্বি-বন্ধন ও ত্রিবন্ধন একত্রে থাকলে নামকরণঃ
রুল-১
ঃ যদি একই সাথে দ্বি-বন্ধন
ও ত্রি-বন্ধন উপস্থিত থাকে সেক্ষেত্রে যৌগটিকে অ্যালকিন হিসেবে বিবেচনা ও সংখ্যায়িত করে অতপর অ্যালকিন এর নামের e এর
স্থলে yne বসিয়ে দ্বি-বন্ধন
ও ত্রি-বন্ধনের অবস্থান উল্লেখ করে নামকরণ করা হয়।
এখানে বহু বন্ধনী এর দিক থেকে সংখ্যায়িত করা হয়েছে।

রুল -২ঃ যদি কার্বন-কার্বন
দ্বি-বন্ধন ও ত্রি-বন্ধন শিকলের দুই প্রান্তে অবস্থান করে, সেক্ষেত্রে দ্বি-বন্ধনির দিক থেকে সংখ্যায়িত করতে হবে।

অ্যালকোহলের নামকরণ
ঃ
সাধারণ সংকেত
=> CnH2n+1OH
নামের শেষে
থাকবে =>
অল (অ্যালকানল, অ্যালকিনল, অ্যালকাইনল)
কার্যকরী মূলক
=> -OH (nvB‡Wªvw·j মুলক)
CH3OH
মিথানল (ট্রিভিয়াল নাম -
মিথাইল অ্যালকোহল)
রুল -১ঃ হাইড্রোক্সিল মুলক m¤^wjZ দীর্ঘতম
কার্বন শিকলকে মুল অ্যালকেন ধরা হয়।



৩-পেন্টিন-১-অল বা পেন্ট-৩-ইন-১-অল ৪-মিথাইল-৩-পেন্টিন-১-অলরুল -
৩ঃ দুই বা ততধিক হাইড্রোক্সিল মুলক যুক্ত থাকলে তাদেরকে ডাইঅল, ট্রাইঅল ইত্যাদি নামে প্রকাশ করা হয়।

অ্যালডিহাইডের নামকরণ ঃ
দ্বি-যোজী কার্বনিল মুলকের (>C=O) মুক্ত যোজনী দ্বয়ের একটি যদি অবশ্যই হাইড্রোজেন পরমানু এবং অপরটি হাইড্রোজেন বা অ্যালকাইল বা অ্যারাইল মুলক দ্বারা যুক্ত থাকে তবে তদেরকে অ্যালডিহাইড বলে।
সাধারণ সংকেত
=> CnH2n+1CHO
নামের শেষে
থাকবে =>
ন্যাল (অ্যালকান্যাল, অ্যালকিন্যাল)
কার্যকরী মূলক
=> -CHO (A¨vjwWnvBW মুলক)




৩-মিথাইল বিউটান্যাল ২-ইথাইল-৩-
মিথাইল পেন্টান্যাল

কিটোনের নামকরণ
ঃ
দ্বিযোজী কার্বনিল মুলকের (>C=O) মুক্ত যোজনী দ্বয়ে যদি একই অথবা ভিন্ন অ্যালকাইল মুলক অথবা একটি অ্যালকাইল ও অন্যটি অ্যারাইল মুলক দ্বারা যুক্ত থাকে তাদেরকে কিটোন বলে।
সাধারণ সংকেত
=> R-CO-R/
( এখানে ও
একই অথবা ভিন্ন প্রকারের অ্যালকাইল বা অ্যারাইল মুলক)
নামের শেষে
থাকবে =>
ওন বা নোন (অ্যালকানোন, অ্যালকিনোন)
কার্যকরী মূলক
=> -CO- (wK‡Uvb মুলক)



২-পেন্টানোন বা পেন্টানোন-২ ৪-ইথাইল হেক্সানোন-২
রুল-২ঃ কার্বন শিকলে কিটোন মুলকের অবস্থানকে (দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন থাকলেও) ক্ষুদ্রতম সংখ্যা দ্বারা
প্রকাশ করা হয়।

৬-মিথাইল-৪-হেপ্টিন-২-ওন
কার্বক্সিলিক এসিডের নামকরণ ঃ
সাধারণ সংকেত
=> CnH2n+1COOH
নামের শেষে
থাকবে =>
অয়িক এসিড
কার্যকরী মূলক
=> - COOH (Kve©w·wjK মুলক)




৩-মিথাইল
বিউটানয়িক এসিড ২-ইথাইল-৩-মিথাইল
পেন্টানয়িক এসিড
#মিশ্র কার্যকরী মুলক যুক্ত থাকলে নিম্নের চার্ট টি অনুসরণ করতে হবে-
অগ্রগণ্য অনুসারে সমগোত্রীয় শ্রেণীর নাম
|
কার্যকরী মুলক
|
নামের পূর্ব পদ
|
নামের পরপদ
|
কার্বক্সিলিক এসিড
|
-COOH
|
-
|
অয়িক এসিড
|
এসিড অ্যামাইড
|
-CONH2
|
অ্যামিডো
|
অ্যামাইড
|
নাইট্রাইল বা সায়ানাইড
|
-CN
|
সায়ানো
|
নাইট্রাইল
|
অ্যালডিহাইড
|
-CHO
|
অ্যালকানোয়িল
|
অ্যাল বা ন্যাল
|
কিটোন
|
-CO-
|
অক্সো
|
ওন বা নোন
|
অ্যালকোহল
|
-OH
|
হাইড্রোক্সি
|
অল
|
অ্যামিন
|
-NH2
|
অ্যামিনো
|
অ্যামিন
|
অ্যালকিন
|
>C=C<
|
-
|
ইন
|
অ্যালকাইন
|
-C
![]() |
-
|
আইন
|
অ্যালকেন
|
C-C
|
-
|
এন
|
ইথার
|
-OR
|
অ্যালকোক্সি
|
-
|

২-অক্সো-৩-মিথাইল
বিউটানয়িক এসিড